ঢাকা,বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪

আজ ত্রি-বার্ষিক সম্মেলণ ও কাউন্সিল জেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলণ ঘিরে উজ্জীবিত নেতাকর্মীরা

61686926-2906-4e3c-85e3-af236b2d8c92-300x272এম.শাহজাহান চৌধুরী শাহীন ॥

কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিল ও সম্মেলন দীর্ঘ ১৩ বছর পর আজ ৩১ জানুয়ারী অনুষ্ঠিত হবে। আ’লীগের সম্মেলন ঘিরে এখন উজ্জীবিত স্থানীয় নেতাকর্মীরা। আগামীতে নেতৃত্বে কে আসছেন এ নিয়ে শুর হয়েছে আলোচনা সমালোচনা। কে ছিলেন তৃণমূল নেতাদের পাশে। আর কে ছিলেন না এনিয়েও নেতাকর্মীদের মধ্যে চলছে আলোচনা। প্রায় ১৩ বছর পর আজ কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন ও কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ লক্ষে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে জেলা আ’লীগ। পুরো শহরকে অপরুপ সাজে সজ্জিত করা হয়েছে। তোরণ , ব্যানার আর পেস্টুনে ছেয়ে গেছে পুরো শহর। সম্মেলণকে সফল ও সার্থক করতে আসছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রিয় প্রেসিডিয়াম সদস্য, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন ও মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীসহ ১১ কেন্দ্রিয় নেতা। সম্মেলন শান্তিপূর্ণ ভাবে করার জন্যে শুক্রবার ছিল জেলা আওয়ামী লীগের কার্যকারী কমিটির সভা। জেলা পরিষদ হলরুমে এ সভা অনুষ্টিত হয়।

জেলা আওয়ামীলীগ সূত্র জানায়, ৩১ জানুয়ারী রবিবার সকাল ১০ টায় শহীদ দৌলত ময়দানে সম্মেলন আনুষ্ঠানিক শুরু হবে। এরপর একে একে ওই মঞ্চে জেলা আওয়ামী লীগকে উজ্জীবিত করতে বক্তব্য রাখবেন, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট ১১ জন নেতা। এভাবেই শেষ হবে প্রথম পর্বের অধিবেশন। আর দ্বিতীয় পর্বের অধিবেশন হবে সৈকতের ডায়াবেটিকস পয়েন্টের বিয়াম ফাউন্ডেশন মিলনায়তনে।

এদিকে, ৩১ জানুয়ারি বিকালেই বিমান যোগে কক্সবাজার ত্যাগ করবেন সম্মেলনের প্রধান অতিথি সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম সহ অন্যান্যরা। থাকবেন শুধু কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক মাহাবুবুল আলম হানিফ। কাউন্সিল যে মুহুর্তে শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে সে সময়ে চলে যাচ্ছেন কেন্দ্রীয় নেতারা।

তৃণমূল নেতাকর্মীরা জানান, তারা দীর্ঘদিন নেতৃত্ব দেখেছেন। হয়েছেন নেতাদের রাজনৈতিক কোন্দলের বলি। বিভিন্ন ভাবে হয়রানিও হয়েছেন। নেতারা অনেকে পাশে দাঁড়াননি তাদের। এজন্য কারও দ্বারা ব্যবহৃত না হয়ে নতুন মুখের স্বপ্ন দেখছেন তারা। জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি

কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক সালাউদ্দিন আহমেদ সিআইপি জানান, কেন্দ্রীয় হাই কমান্ড চাইলে নেতৃত্ব পছন্দ করে দিতে পারেন। সে ক্ষমতা তার রয়েছে। তবে তিনি চান, গনতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় কাউন্সিলর ভোটেই নতুন কমিটি হোক।

জেলা আওয়ামীলীগের সূত্রটি আরো জানায়,জেলা আওয়ামীলীগের আওতাভুক্ত ১১ টি ইউনিটের ৩২০ জন কাউন্সিলরের তালিকা চুড়ান্ত করা হয়েছে। ভোটের জন্য ব্যালেট পেপার ও তৈরি করা হয়। তবে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব কে পালন করবেন তা নির্ধারিত করা হয়নি। এটি কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগ ঠিক করবেন বলে সুত্রটি নিশ্চিত করেছেন।

সম্মেলনে সভাপতি পদে ৬ জন ও সাধারণ সম্পাদক পদে ৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সভাপতি পদে প্রার্থীরা হচ্ছেন, জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এড. একে আহম্মদ হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগ বর্তমান সাধারণ সম্পাদক সালাহ উদ্দিন আহমদ সিআইপি, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক এড.সিরাজুল মোস্তফা, জেলা আ’লীগ সাবেক সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম চৌধুরী, চকরিয়া উপজেলা আ’লীগ সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আলম(বিএ অনার্স এমএ), জেলা মহিলা আ’লীগ সভানেত্রী কানিজ ফাতেমা মোস্তাক প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আর সাধারণ সাধারণ সম্পাদক পদে সাবেক পৌরসভা চারবার নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও কক্সবাজার সরকারী কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক জিএস নুরুল আবছার, কক্সবাজার পৌর আ’লীগ সভাপতি মজিবুর রহমান চেয়ারম্যান, জেলা আ’লীগ সদস্য রাশেদুল ইসলাম, জেলা আ’লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক মাসেদুল হক রাশেদ, কৃষক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এড.ফখরুল ইসলাম গুন্দু, রামু উপজেলা আ’লীগ সভাপতি সোহেল সরওয়ার কাজল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এড. একে আহম্মদ হোসেন বলেন, ইতিমধ্যে সম্মেলনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। গঠনতান্ত্রিক যদিও বা নির্বাচন কমিশনার ঠিক করার দায়িত্ব সম্মেলন প্রস্তুুতি কমিটির । তারপরও করা হয়নি। কক্সবাজার আগত অতিথিরাই নির্ধারণ করবেন নির্বাচন কমিশনারের বিষয়টি।

জেলা আওয়ামী লীগ সুত্রে জানা গেছে, ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন ও কাউন্সিলে অংশ নিতে আসছেন, ১১ জন কেন্দ্রিয় নেতার। তাদের মধ্যে ৪ জন মন্ত্রী এবং ৩ জন প্রতিমন্ত্রী রয়েছেন। সম্মেলন উদ্বোধন করবেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রিয় প্রেসিডিয়াম সদস্য, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রিয় সাধারণ সম্পাদক, জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।

সুত্রমতে, সম্মেলণে প্রধান বক্তা থাকবেন, কেন্দ্রিয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ। এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে থাকবেন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রিয় সাংগঠনিক সম্পাদক বীর বাহার উ শৈ সিং, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক, পরিবেশ ও বন প্রতিমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক, বিজ্ঞান প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান, শ্রম ও জনশক্তি বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডাঃ বদিউজ্জামান ভুঁইয়া ডাবলু, কেন্দ্রিয় সদস্য মির্জা আজম এমপি, সুজিত রায় নন্দী ও আমিনুল ইসলাম আমিন। সম্মেলন ও কাউন্সিল অধিবেশনে সভাপতিত্ব করবেন, জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাড. একে আহমদ হোছাইন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় থাকবেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সালাহ উদ্দিন আহমেদ সিআইপি।

এদিকে, গত শুক্রবার রাতে সম্মেলন উপলক্ষে বর্তমান জেলা কমিটির সর্বশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয় জেলা পরিষদ মিলনায়তনে। সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশেই যার সফল সমাপ্তি ঘটে। পরস্পর পরস্পরের প্রতি ক্ষমা চেয়ে ও কুলাকুলির মাধ্যমে আনন্দ আর কোলাহলে ইতি টানা হয় ওই সভার।

পাঠকের মতামত: